আমড়া ও আমলকী এর সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। এই ফল দুইটির মধ্যে রয়েছে অনেক ভিটামিন। মৌসুমের সময় বাজারে গেলে দেখা যায় এই ফল। এছাড়া রাস্তা ঘাটে প্রায় সব সময়েই পাওয়া যায়। আমড়া সাধারণত মৌসুমী ফল। আমড়ার মৌসুমী ফল। মৌসুমের সময়ে আমড়া পাওয়া যায়। আমলকী প্রায় সাড়া বছর পাওয়া যায়। এই ফল দুইটির রয়েছে নানা ধরনের উপকারিতা। আমড়া ও আমলকি খাওয়ার উপকারিতা নিচে এ সম্পর্কে দেওয়া হল।
আমড়া ও আমলকি খাওয়ার উপকারিতা!
আমড়া :
আমড়া একটি মৌসুমী ফল এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। এই ফল দেখতে সবুজ আকৃতি। মৌসুমের সময় হাটে বাজারে পাওয়া যায় আমড়া। এটি খেতে অনেক মজা। আমড়া তে থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা আমাদের হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে। এছাড়া রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। আমড়াতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রটিন যা আমাদের প্রটিন এর চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়া আমড়া তে রয়েছে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি আমাদের শরীরের ত্বক, জিহ্বা ইত্যাদির ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমড়া খেতে টক। এটি বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়। শুধু কাঁচা আমড়া খাওয়া যায়। আমড়া শুকিয়ে আচার তৈরি করা যায়, না শুকিয়ে আচার করা যায়, আমড়া তরকারিতে ব্যবহার করা যায়। আমড়া তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি দাঁতের গুড়া শক্ত করে, দাঁত থেকে পুজ পড়া নিয়ন্ত্রণ করে খাবার খেতে অসুবিধা হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে, দাঁত অকালে ঝরে যাওয়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া আমড়া বিভিন্ন রোগ যেমন কুষ্টকাঠিন্য, বদ হজম, সর্দি ইত্যাদির জন্য উপকারী। মৌসুমে ভিত্তিক ফল হিসেবে আমড়া অতুলনীয়। এই ফল পুষ্টির দিক দিয়ে যেমন এগিয়ে তেমনি জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ও এটি অতুলনীয়।
১. আমড়া রক্ত স্বল্পতা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমড়া তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এটিই দেহের রক্ত স্বল্পতা দূর করতে সহায়তা করে থাকে।
২. ক্ষুধা মন্দা ভাব দূর করে আমড়া।
৩. আমড়া খেতে সুস্বাদু এবং এটি রুচি বৃদ্ধি করে, খাবার খাওয়ার প্রবনতা বাড়িয়ে দেয়।
৪. আমড়া কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদ হজম দূর করতে সহায়তা করে।
৫. আমড়া শরীরে এন্টি অক্সিজেন হিসেবে কাজ করে।
৬. প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় জিহ্বা, দাঁত রক্ষার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে আমড়া।
৭. আমড়ার একটি বিশেষ গুণ হলো এটি শরীরের রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষেত্রে কাজ করে।
মৌসুমী ফল হিসেবে আমড়া খুবই উপকারী একটা ফল। এই আমড়া তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন যা আমাদের দেহের বিভিন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
আমলকী :
আমলকী আমাদের সকলের পরিচিত এক টা ফল। আমড়া বিভিন্ন ভেষজ পদার্থ নিয়ে থাকি। আমাদের দেহের জন্য সব থেকে উপকারি ভেষজ হলো আমলকী। আমলকী ভেষজ হিসেবে প্রতিদিন খাওয়া যায়। যেহেতু এর কোন পার্শপ্রতিক্রিয়া নেই এবং এটি শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে তাই আমলকী খুবই জনপ্রিয়। আমারা আমাদের শরীর ঠিক রাখতে প্রতিদিন অনেক রকমের ঔষধ খেয়ে থাকি এর পরিবর্তে আমলকী আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী হবে। এর পার্শপ্রতিক্রিয়া না থাকার কারণে আমাদের সকলের এটি খেয়ে দেখা উচিত।
আমাদের প্রতিদিন অন্তত একটা করে আমলকী খাওয়া দরকার। আমলকী বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়। আমলকী এমনিই খাওয়া যায়, আমলকীর আচার খাওয়া যায়, আমলকী শুকিয়ে মশলা এবং তেল দিয়ে খাওয়া যায়, আমলকী শুকিয়ে চূর্ণ করে তরকারীর সাথে ব্যবহার করা যায় হ
১. চুলের ক্ষেত্রে আমলকী অনেক উপকারি। বর্তমানে সকলেরই প্রায় চুল পরার সমস্যা রয়েছে। আমলকী চুল পরা প্রতি রোধ এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।
২. চুলের খুশকি রোধ করতে বিভিন্ন ব্রেন্ডের শেম্মু ব্যবহার করে যখন কোনো ফল পাওয়া যায় না আমলকী চুলের খুশকি দূর করে এবং চুল পাকা প্রতিরোধ করে।
৩. আমলকীতে রয়েছে ভিটামিন যা আমাদের চোখে ভালো রাখতে সহায়তা করে। চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
৪. আমলকীর রস মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সক্ষম এবং দাঁত মজবুত করে দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
৫. আমলকী আচার বা বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়। আমলকী হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে। আমলকীর মুরব্বা বা আচার মস্তিষ্ক সবল ও ভালো রাখে।
৬. আমলকী কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।
৭. ত্বক ভালো রাখতে ও আমলকী অনেক উপকারি ভূমিকা পালন করে।
৮. আমলকী দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং দেহ সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
শাকসবজি খাওয়ার মধ্যে প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। নিচে আলোচনা করা হলো :
এখন শুধু জীব হত্যার বদলে শাকসবজি খাওয়া এই রীতি এখন আর নেই। শাকসবজি খাওয়ার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে উপকারিতা পাওয়া যায়। শাকসবজি খাওয়ার মধ্যে শরীরে বিভিন্ন উপকার বিদ্যমান রয়েছে। শাকসবজি খাওয়ার মধ্যে নানা বিধ উপকারিতা রয়েছে।আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাফেজ বা আশ জাতীয় খাবার খুবই উপকারী এবং প্রয়োজন।
রাফেজ বা আঁশ জাতীয় খাদ্য আমাদের পরিপাকে সহায়তা করে। পরিপাক তন্ত্র ভালো রাখে। শাকসবজি খাওয়ার মধ্যে এই আঁশ জাতীয় খাদ্য আমাদের শরীরে পৌঁছে এবং পরিপাক এ সহায়তা করে। এছাড়া শাকসবজি খাওয়া আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বি অপসারণ হয়। আমাদের শরীরের জন্য অতিরিক্ত চর্বি খুবই ক্ষতি করে।
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা খুবই অলস হয়ে যাচ্ছি এবং আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে বিভিন্ন রোগ এবং লক্ষ্য করলে দেখা যাবে প্রায় প্রতিটি মানুষের চর্বি রয়েছে।
শাকসবজি খাওয়ার উপকারিতা
চর্বি যদিও আমাদের দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ তবে অতিরিক্ত চর্বি আমাদের দেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কিন্তু শাকসবজি খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বি অপসারণ হয় এবং আমাদের হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ সংমিশ্রিত খাদ্য খাওয়ার ফলে আমাদের দেহ এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ যেমন কিডনি , হৃৎপিণ্ড ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু শাকসবজি তে বেশি রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় না। তাই শাকসবজি খেলে আমাদের শরীর সুস্থ এবং রাসায়নিক পদার্থ শরীরে খুব কম প্রবেশ করতে পারবে।
আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় প্রোটিন ও ক্যারিয়ার জাতীয় খাদ্য থাকা খুবই জরুরী। শাকসবজি এর মধ্যে এসকল উপাদান বিদ্যমান থাকে। শাকসবজি হৃদরোগ , ডায়াবেটিস ও ক্যান্সার এর মতো ক্ষতিকর রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়।
নিচে শাকসবজি খাওয়ার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে আরো ও স্পষ্ট ভাবে বলা হলো :
ওজন কম :
ওজন কমানোর জন্য মানুষ নানা ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে কিন্তু তার পরেও তারা ওজন কমাতে সক্ষম হয় না এবং ডায়েট করার ফলে আরও দূর্বল হয়ে পরে এতে শরীরে রোগ বাসা বাঁধে। কিন্তু শাকসবজি খাওয়ার ফলে শরীরের অতিরিক্ত ক্ষতিকর তেল বা চর্বি শরীর থেকে নিস্বরন হয় এবং শরীরের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করে ও শরীর সুস্থ রাখে।
শক্তি বৃদ্ধি :
শাকসবজি খাওয়ার ফলে আমাদের মুখের রুচি বৃদ্ধি পায়। শরীর ভালো থাকে। শাকসবজি পরিপাকে সহায়তা করে ফলে আমরা যে খাবার গ্রহণ করি এতে অধিক পরিমাণে কাজ হয় এবং সকল উপকারি দ্রব্য আমাদের শরীরে ভালো রাখতে সাহায্য করে। আমরা যে খাদ্য গ্রহণ করি শাকসবজি খাওয়ার ফলে সেই খাদ্য গুলো আমাদের শরীরে প্রবেশ করে সঠিক পুষ্টি প্রদান করে এবং পরিপাকে সহায়তা করে এতে আমাদের শক্তি বৃদ্ধি হয়।
রাফেজ বা আঁশ জাতীয় খাদ্য :
রাফেজ জাতীয় খাদ্য বলতে আমরা সাধারণত আঁশ জাতীয় খাদ্য বুঝি। আঁশ জাতীয় খাদ্য আমাদের শরীরে জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই খাদ্য গুলো আমাদের শরীরের রক্ত চলাচল সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে , উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাফেজ বা আঁশ জাতীয় খাদ্য রাখা প্রয়োজন। এছাড়া রাফেজ বা আঁশ জাতীয় খাদ্য পরিপাকে ও সাহায্য করে থাকে।
জাঙ্ক ফুড খাওয়ার আশঙ্কা কমে :
জাঙ্ক ফুড খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। জাঙ্ক ফুড আমাদের শরীরের সুস্থতা কে বাঁধা প্রদান করে। এক বার জাঙ্ক ফুড খাওয়ার খারাপ অভ্যাস হয়ে গেলে সেটা বাদ দেওয়া খুবই কষ্টকর। শাকসবজি বেশি বেশি খেলে এটি জাঙ্ক ফুড খাওয়ার প্রবনতা কমিয়ে দেয়।
হজম শক্তি বাড়ায় :
উদ্ভিদ জাতীয় খাবারে থাকে প্রচুর পরিমাণে আঁশ এই আঁশ জাতীয় খাদ্য দেহের বজ্র নিস্বরনে সহায়তা করে। শাকসবজি তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি এছাড়া শাকসবজির রস আমাদের দেহের জন্য ও খুব উপকারী। বেশি বেশি পরিমাণে শাকসবজি খেলে আমাদের হজম শক্তি বেড়ে যায়।
ঘুম ভালো হয় :
যে সকল খাবার আমাদের শরীরের শক্তি দ্রুত ফুরিয়ে যেতে সাহায্য করে ঐ খাবার গুলো আমাদের কে সারা রাত জাগিয়ে রাখতে পারে। আমাদের সকলের সুস্থ থাকার জন্যে ভালো ঘুমের অনেক প্রয়োজন রয়েছে। শাকসবজি জাতীয় খাদ্যের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি ৬ যা আমাদের ভালো ঘুম এর জন্য সাহায্য করে থাকে।
